নিজের বিজনেসের উদ্যোক্তা হিসেবেই হোক বা অন্যজনের বিজনেসের প্রচারেই হোক, অনলাইন সমৃদ্ধির বর্তমান সময়ে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) ব্যপারে দক্ষতা অতি ইম্পোর্টেন্ট ১টি বিষয়। অনলাইন মার্কেটপ্লেসে সেরা হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে এই দক্ষতা।
চাইলে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে গৎবাঁধা ৪ বছরের ডিগ্রি নিয়েও সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন শেখা যায়, তা সত্ত্বেও তুলনা মুলক ভাবে নতুন শিক্ষণীয় বিষয় হওয়ায় ইন্টারনেটে নিজেকে এ বিষয়ে স্কিলফুল করে নিতেই অর্ধেকের বেশি লোক ঝোঁক বোধ করেন।
আজকের এ লেখায় সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন ব্যপারে নিজেকে পারদর্শী করে তোলার জন্য ৫টি উপায় নিয়ে আলোচনা করা হবে–
এসইও কোর্স করা
এসইও সংক্রান্ত কাজগুলোতে সব সময় সনদপত্রের মতো কাগুজে বিষয় দরকার হয় না, বরং কাজের দক্ষতাকেই সর্বাগ্রে রাখা হয়। কোর্সেরা বা ইউডেমির মতো অনলাইন কোর্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠান থেকে সহজেই ইন্টারনেটে সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন বিষয়ক কোর্স সম্পন্ন করা যায়। সনদপ্রাপ্তির বিষয়ে ইচ্ছুক হলে নির্দিষ্ট প্রাইস পরিশোধের সাহায্যে সনদ সংগ্রহ করা যায়, নয়তো বিনামূল্যেও এসব কোর্সে অংশ নেওয়া সম্ভব। অনলাইনের কোর্সের অন্যতম সুবিধা হচ্ছে, এতে অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মতো সময় বা অর্থ, কোনোটিই খরচ করার জন্য হয় না।
কোর্সশিক্ষার টাইম শুরুতে নজর দেওয়ার জন্য হবে সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন বিষয়ক মৌলিক অংশগুলোর দিকে। এর মধ্যে রয়েছে এসইওর কার্যক্রম, এইচটিএমল, গুগল র্যাংকিং ফ্যাক্টর ইত্যাদি। মৌলিক ব্যপারে অর্জনের পর মনোযোগ দিতে হবে পরের ধাপে, যাতে আছে এসইওর অন্যসব খুঁটিনাটি; যেমন– শব্দ বাছাই, কনটেন্ট মার্কেটিং, লিংক বিল্ডিং, টেকনিক্যাল অপটিমাইজেশন তার সাথে কনটেন্ট অপটিমাইজেশন ইত্যাদি বিষয়।
নিয়মিত চর্চা
নিয়মিত ব্যবহার না করলে অতি তীব্র তলোয়ারেও জং ধরে যায়। চর্চাই ব্যক্তিকে তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে। তাই সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন কোর্স শেষ করার পর ‘আমি সবই পারি’, এমন মনোভাব থেকে সরে থাকতে হবে। পেশাদারি কাজে এগোনোর প্রথমে নিজের বা অবগত কারও ওয়েবসাইটে এসব দক্ষতার ব্যবহার ঘটাতে হবে। কনটেন্টের ধরন, কি-ওয়ার্ড অপটিমাইজেশন, কনটেন্টের দৈর্ঘ্য তার সাথে সর্বোপরি লিংক তৈরির বিভিন্ন কৌশল– এসব ব্যপারে নিজেকে ঝালিয়ে নিতে হবে। শুরুতে কিছু ভ্রান্তি হতে পারে, কিন্তু সেসব ভ্রান্তি থেকে শিক্ষা নিয়ে সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন দক্ষতাগুলোর অনুশীলন চালিয়ে যেতে হবে। যেকোনো শিক্ষাই চর্চার অভাবে হারিয়ে যেতে পারে, তাই নিজের পরিশ্রমকে বৃথা যেতে না দিয়ে নিয়মিত চর্চা চালিয়ে যাওয়া উচিত।
পোর্টফোলিও তৈরি
পেশাদারি বিশ্বে অনেকে পর্যাপ্ত কাজই করে থাকেন, অভিজ্ঞতার ঝুলি বহুভাবেই পূর্ণ থাকে। কিন্তু সেই কাজগুলো এক জায়গায় সুবিন্যস্ত করা না থাকার কারণে নিয়োগদাতার নিকট নিজের অভিজ্ঞতাকে সঠিক উপায়ে উপস্থাপন করতে পারেন না। এই ভুলটি করা যাবে না। নিজের সব কাজকে ডিজিটাল ফরম্যাটে, কাজের সময় ও আকার-প্রকার অনুসারে এক জায়গায় সুষ্ঠুভাবে জড়ো করার জন্য হবে। পোর্টফোলিও তৈরির টাইম রাখতে হবে যে নিজের কাজের শক্তিশালী দিকগুলো যাতে ভালোভাবে ফুটে ওঠে। বিভিন্ন এসইও কৌশলের সাহায্যে কীভাবে ফলাফল এসেছে, তথ্য-উপাত্ত বা পরিসংখ্যানের সঠিক প্রয়োগ, অর্থপূর্ণ মেট্রিক নির্ধারণ প্রভৃতি সবকিছুর উপরই আলাদাভাবে আলোকপাত করতে হবে।
পোর্টফোলিও তৈরি থাকার সর্বাপেক্ষা বৃহৎ সুফল হচ্ছে, কোনো পেশাদারি চান্স পেলে অনেক সহজেই নিজের দক্ষতা ও এক্সপেরিয়েন্স সম্মন্ধে নিয়োগদাতাদের এক নজরে জানিয়ে দেওয়া যাবে। এতে করে আরেকটি সুবিধাও হবে। নিজের কাজের বিবর্তন তথা অগ্রগতি সম্মন্ধে নিজেও অনেক ভালো অনুমান রাখা যাবে এবং কোনো কাজই হারিয়ে যাবে না।
প্রথমে ফ্রিল্যান্সিং
নিজের ওয়েবসাইটে চর্চার পর যখন যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে, সেই সময় ফ্রিল্যান্সিং কাজের চেষ্টা চালাতে হবে। ফ্রিল্যান্সিংয়ে বাঁধাধরা সময় বা স্থানের চাপ থাকে না, এজন্য শুরুর দিকে ফ্রিল্যান্সিংই হবে যোগ্য চর্চা। ফ্রিল্যান্সিংকালে করা কাজগুলো দ্বারা নিজের পোর্টফোলিও ভারি করাও হবে, একসাথে পরের টাইমে কোম্পানী বা ইন-হাউজ সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কাজ করার জন্য নিজেকে রেডি করে নেওয়াও যাবে।
নেটওয়ার্কিং
ব্যক্তিজীবন বা পেশাদারি জীবন, সব ক্ষেত্রেই মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ ও নেটওয়ার্কিং বৃদ্ধি টিকে থাকার সেরা একটি কৌশল। এসইও জগতও এর ব্যতিক্রম নয়। নিজের কাজে আত্মবিশ্বাস আসার পর সম্ভাব্য নিয়োগদাতা বা ক্লায়েন্টদের নিকট নিজেকে পৌঁছে দেবার শুরু করতে হবে। অনলাইনে নানারকম পেশাদারি গ্রুপ বা সম্প্রদায়ের সাথে নিজেকে যুক্ত করতে হবে, মন্তব্য লেনদেনের মাধ্যমে এই বিশ্বে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করার জন্য হবে।
এজন্য ইন্টারনেটে নানারকম ব্লগ লিখনি বা সোশ্যাল যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেওয়া বেশ ভালো কৌশল হতে পারে। এ ব্যতীত লিংকডইন বা অন্যান্য পেশাদারি প্ল্যাটফর্মে নিজের কাজ সম্মন্ধে জানানোর একসাথে সেইম ধরনের পেশার মানুষের সাথে যুক্ত হওয়া নেটওয়ার্কিং বৃদ্ধির কার্যকরী উপায়।